আন্তর্জাতিকমানব সম্পদ

ওমানে ‘গোল্ডেন ভিসার’ আওতায় বড় ধরনের সুবিধা পাবেন যারা

অনলাইন নিউজ ডেস্ক

‘গোল্ডেন ভিসা’ কর্মসূচিতে নতুন মাত্রা আনতে যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমান। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য আগের তুলনায় আরও বেশি রিয়েল এস্টেট ও ব্যবসায়িক খাতে বিনিয়োগের সুযোগ রাখছে দেশটি।

এর মধ্যেই ওমানের আবাসন শিল্পে উচ্চমূল্যের লেনদেন বেড়েছে, যার মধ্যে সম্প্রতি সবচেয়ে দামী একটি পেন্টহাউস বিক্রিও রয়েছে।

সিনিয়র ওমানি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নতুন ‘গোল্ডেন ভিসা’ কর্মসূচির বিস্তারিত তথ্য আগামী ৩১ আগস্ট প্রকাশ করা হবে।

ওমান প্রথমবার দীর্ঘমেয়াদে বসবাসের ভিসা সুবিধা চালু করে ২০২১ সালে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবার এটিকে নিয়ে নতুনভাবে প্রচারণা চালিয়ে আরও আকর্ষণীয় করার চেষ্টা করছে মাসকট। দেশটিতে বিনিয়োগের ভিত্তিতে বসবাসের নিয়ম আগে থেকেই ছিল। তবে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) ও সৌদি আরবের তুলনায় ওমানের বিনিয়োগ শর্ত অনেক বেশি। উদাহরণস্বরূপ, ইউএই–তে সম্পত্তি বিনিয়োগের ভিত্তিতে গোল্ডেন ভিসার জন্য ন্যূনতম বিনিয়োগের শর্ত ২০ লাখ দিরহাম। সৌদির ‘প্রিমিয়াম রেসিডেন্সি’ পেতে অন্তত ৭০ লাখ সৌদি রিয়ালের বিনিয়োগ প্রয়োজন। আর দীর্ঘমেয়াদি ভিসার জন্য অন্তত ৪০ লাখ রিয়াল।

ওমান বর্তমানে বিনিয়োগের ভিত্তিতে পাঁচ ধরনের রেসিডেন্সি ভিসা দিচ্ছে, যা সর্বোচ্চ ১০ বছরের জন্য প্রযোজ্য। এর শর্তগুলো হলো-অন্তত ৫ লাখ ওমানি রিয়াল মূল্যের একটি সম্পূর্ণ নির্মিত আবাসিক সম্পত্তি কেনা। কমপক্ষে ৫ লাখ রিয়াল মূল্যের কোনও কোম্পানির শেয়ার ধারণ। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে ৫ লাখ রিয়াল মূল্যের শেয়ার বিনিয়োগ। কমপক্ষে ৫০ জন ওমানি নাগরিককে কর্মসংস্থান দেওয়া। সরকারি উন্নয়ন বন্ডে অন্তত ৫ লাখ রিয়াল বিনিয়োগ। এছাড়া ৫ বছরের ভিসারও সুযোগ রয়েছে, যেখানে বিনিয়োগের পরিমাণ অর্ধেক রাখা হয়েছে।

অলিভিরি কনসালট্যান্সির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ইরিনা কোটেস্কু বলেন, “ওমান তার নিজস্ব পথ তৈরি করছে— ধীরগতিতে হলেও এটি অনেক বেশি সমন্বিত। এখানে মূল আকর্ষণ কেবল বিনিয়োগ নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা।”

তিনি আরও বলেন, “পরিষ্কার নীতিমালা, ডিজিটাল অবকাঠামো এবং লক্ষ্যভিত্তিক বিনিয়োগকারীদের জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করে ওমান প্রমাণ করছে তারা শুধু মূলধন নয়, বিনিয়োগকারীর প্রতিশ্রুতিকেও মূল্যায়ন করছে। এ কারণেই ওমানকে গালফ অঞ্চলে সবচেয়ে সুসংগঠিত বিনিয়োগের প্রবেশদ্বার হিসেবে দেখা হচ্ছে।”

ওমান সরকার ‘মুজিদাহ কোম্পানিজ ইনিশিয়েটিভ’ নামে নতুন একটি কর্মসূচি চালু করতে যাচ্ছে, যা মূলত ভালো পারফর্ম করা স্থানীয় কোম্পানিগুলোকে সহায়তা ও পুরস্কৃত করবে। এছাড়া ‘ওমান বিজনেস’ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বাণিজ্যিক রেকর্ড ই-ট্রান্সফারের ব্যবস্থাও চালু হচ্ছে।

ইরিনা বলেন, “আগে বিনিয়োগকারীর বসবাসের শর্ত ছিল মূলত আর্থিক মানদণ্ড— যেমন ২ দশমিক ৫ লাখ রিয়ালে পাঁচ বছরের ভিসা, বা ৫ লাখ রিয়ালে ১০ বছরের ভিসা, কিংবা স্থানীয় কর্মসংস্থান সৃষ্টি। নতুন গোল্ডেন ভিসা সেই ভিত্তিকে আরও বিস্তৃত করছে, যেখানে বিনিয়োগকারীর অধিকার, পরিবারকে অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ এবং আধুনিক প্রশাসনিক কাঠামো যোগ হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “মুজিদাহ কোম্পানিজ ইনিশিয়েটিভ সরাসরি ভিসা সংক্রান্ত নয়, বরং স্থানীয় কোম্পানিগুলোকে শক্তিশালী করার জন্য নেওয়া পদক্ষেপ। এর ফলে বিদেশি বিনিয়োগের পাশাপাশি দেশের ভেতরও অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাড়বে।” সূত্র: গালফ নিউজ

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button