বাংলাদেশিদের পর্যটন ভিসা ছাড়া সব ধরনের ভিসা দিচ্ছে ভারত। চিকিৎসা বা অন্য জরুরি ভিসা দেওয়াকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে দেশটি। তবে বাংলাদেশিদের জন্য ট্যুরিস্ট ভিসা ভারত সরকার পুরোপুরি বন্ধ রেখেছে।
ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রতিদিন দেড় থেকে দুই হাজার ভিসা ইস্যু করা হচ্ছে। যা বাংলাদেশিদের জন্য অন্য যেকোনো দেশের ইস্যু করা ভিসার চেয়ে অনেক বেশি। এদিকে ভারতীয় ভিসা ঘিরে দেশে বেশ কিছু প্রতারক চক্র গড়ে উঠেছে। তাদের থেকে সাবধান থাকার পরামর্শ দিয়েছে হাইকমিশন।
গত বছরের ৫ আগস্টের আগে বাংলাদেশে বছরে ১৬ লাখের মতো ভিসা ইস্যু করতো ভারত। তখন প্রতিদিন গড়ে ৬ থেকে ৭ হাজার ভিসা ইস্যু করা হতো। এখন ট্যুরিস্ট ভিসা বন্ধ থাকায় ভিসা ইস্যুর সংখ্যা কমে এসেছে। আগেও ট্যুরিস্ট ভিসার বাইরে অন্যান্য ক্যাটাগরিতে দেড় থেকে ২ হাজার ভিসাই ইস্যু করা হতো।

ওই কর্মকর্তারা জানান, ৫ আগস্টের আগে বাংলাদেশে ১৬টি সেন্টারের মাধ্যমে ভিসা আবেদন গ্রহণ করা হতো। কিন্তু ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে ৪টি ভিসা কেন্দ্রে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে এবং ঢাকায় ভিসাকেন্দ্রের সামনে বিক্ষোভ করে আতঙ্ক তৈরি করা হয়। এতে ভারতীয় ভিসার জন্য নিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা অনিশ্চয়তায় পড়ে। যে কারণে এখন ৫টি ভিসা কেন্দ্রের মাধ্যমে ভিসা আবেদন নেওয়া হচ্ছে। ৫ আগস্টের পর প্রাথমিক পর্যায়ে শুধু শিক্ষার্থী ও মেডিকেল ভিসা ইস্যু করা হলেও এখন পর্যটন ভিসা ছাড়া অন্য সব ধরনের ভিসা ইস্যু করা হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পূর্ণমাত্রায় ভিসা কার্যক্রম চালু করা হতে পারে বলে জানান তিনি।
এদিকে ভারতীয় ভিসা সীমিত হওয়ার সুযোগ নিচ্ছে এক শ্রেণীর অসাধু ভিসা এজেন্ট ও দালালেরা। জানা গেছে, বাংলাদেশজুড়ে ভিসা এজেন্ট এবং দালালরা ভারতীয় ভিসার আবেদন পোর্টালে কৃত্রিম জট তৈরি করছে, যার ফলে প্রকৃত আবেদনকারীদের জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট শ্লট নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্রগুলো এই ধরণের কর্মকাণ্ড ঠেকাতে প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা গ্রহণ করছে এবং অসাধু এজেন্টদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করছে। ইতোমধ্যে ঢাকা ও রাজশাহীতে অসাধু চক্রের ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ভারতীয় হাইকমিশনের দায়িত্বশীল ওই কর্মকর্তা বলেন, অসাধু এজেন্টরা টাকার বিনিময়ে সাধারণ আবেদনকারীর ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে ভিসার জন্য জমা দিচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, এজেন্টরা আবেদনকারীর নামে ভারতের হাসপাতালের ভুয়া কাগজপত্র, বিদেশি দূতাবাসের ভুয়া অ্যপয়েন্টমেন্ট লেটার, ভুয়া প্লেন টিকেট ও ব্যাংক বিবরণী জমা দিচ্ছে। এসব কারণে জরুরি প্রয়োজনীয় ভিসা আবেদনও প্রত্যাখাত হচ্ছে। তাই আবেদনকারীদের প্রতারক চক্রের থেকে সাবধান থাকা জরুরি।
তিনি আরও জানান, জরুরি প্রয়োজনে থাকা মানুষের আবেদন জমা দেওয়ার সুবিধার্থে বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
উপদেষ্টা সম্পাদক-সালাম মাহমুদ
সম্পাদক- এ কে এম জুনাইদ
Copyright © 2025 Tourism News 24. All rights reserved.